পুরান ঢাকার লালকুঠি ফিরে পাচ্ছে পুরনো জৌলুস সম্পর্কে জানুন

করটিয়া জমিদার বাড়ি টাঙ্গাইল যাওয়ার উপায় সম্পর্কে  জানুন আপনি কি পুরান ঢাকার লালকুঠি জৌলস সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে চলুন নিচে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। 

পুরান ঢাকার লালকুঠি বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ওয়াইজ ঘাটে অবস্থিত যাকে নর্থব্রুক  বলা হয় যেটা বর্তমানে স্থানীয়ভাবে লালকুঠি নামে পরিচিত আজও কালের সাক্ষী হিসেবে বাংলায় দাঁড়িয়ে আছে।

পেজ সূচিপত্রঃপুরান ঢাকার লালকুঠি  ফিরে পাচ্ছে পুরনো জৌলুস এ সম্পর্কে জানতে পড়ুন

• পুরান ঢাকার লালকুঠি
• পুরান ঢাকার লালকুঠি ইতিহাস ঐতিহ্য
• পুরান ঢাকার লালকুঠি সংস্কার করন
• স্থানীয়দের  বর্ণনা ক্রম অনুসারে
• পুরান ঢাকার লালকুঠি যাবার উপায়
• ঢাকা লালকুঠি কোথায় খাবেন
• লালকুঠির সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তর পর্ব
• আমাদের শেষ কথা

পুরান ঢাকার লালকুঠি

পুরান ঢাকার লালকুঠি বাংলাদেশের রাজধানীর অন্যতম সৌন্দর্যের নিদর্শনাবলীর একটি যাকে নর্থব্রুক বলা হয় তবে স্থানীয়দের ভাষ্যমতে লালকুঠি নামেই পরিচিতি লাভ করে যা আজও ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে নিরবে দাঁড়িয়ে আছে । সে সময়কার ভারতের গভর্নর জেনারেল জর্জ ব্য়ারিং নর্থব্রুক ১৮৭৪ সালে ঢাকায় আসেন দশ হাজার টাকা দান করেন লালকুঠি ভবনের কাজ শুরু করেন এবং ১৮৮০ সালে ২৫ শে মে নর্থব্রুক হলের শুভ উদ্বোধন করেন তার নাম অনুসারে এ হলের নামকরণ করা হয় নর্থব্রুক হল।নর্থব্রুক হলের দেয়ালের রং লাল হওয়ার জন্য স্থানীয়দের কাছে পরিচিত লাভ করে লালকুঠি নামে যা বর্তমান এর নাম লালকুঠি হিসেবে পরিচিত।

আরো পড়ুনঃকুয়াকাটা সাগর সৈকত গ্রামীণ সৌন্দর্য হোক পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র 

নর্থব্রুক হলের নাম অনুসারে এই সংলগ্ন সড়কের নাম করণ করা হয় নর্থব্রুক রোড। ১৮৮২ সালে ভবনটি পাঠাগারের রূপান্তর করা হয় পরে জনসন হল নামে একটি ক্লাব ঘর সংযুক্তিকরণ করা হয় যার বই সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি ছিল পরে বিলেত থেকে ১৮৭৮ সালে পাঠাগারের জন্য বই নিয়ে আসা হয়েছিল ১৯৭১ সালের যুদ্ধে এই পাঠাগারের অনেকগুলো বই নষ্ট হয়ে যায়।

পুরান ঢাকার লালকুঠি ইতিহাস ঐতিহ্য

পুরান ঢাকার লালকুঠি ইতিহাস ও ঐতিহ্য মূল ফলক হলো সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র ।যার নেতৃত্ব গ্রহণ করতেন সে সময়কার স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তিরা ব্রিটিশ মুঘল ও ইউরোপীয় শৈল্পিক মিশ্রণ দেখা মিলে এ ভবনে । ভবনের মূল উপাত্ত্য বিষয় ছিল নাট্যশালা  সভাকক্ষ এবং মিলনায়তন ও গ্রন্থগার যার কারণে গড়ে ওঠে পুরান ঢাকার সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মূল কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে। এই ভবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ৮ ই ফেব্রুয়ারি ১৯২৬ সালে ঢাকা পৌরসভা থেকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয় । যা প্রাচীনতম ইতিহাসের গৌরবের অধ্যায় সূচনা হয়।

পুরান ঢাকার লালকুঠি সংস্কার করন

পুরান ঢাকার লালকুঠি বহু বছর ধরে অযত্নে পড়েছিল যা মিলানায়তন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছিল না ২০১৬ সালে শেষবারের মতো ব্যবহার হয় বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটির কর্পোরেশন পূর্ণ সংস্কারের কার্যক্রম হাতে নেয় বর্তমানে সংস্কারের কাজ মোটামুটি ৮০ শতাংশ  শেষের দিকে লালকুঠি জৌলুস প্রায় দেড়শ বছর পরে ফিরে পাচ্ছে। ভবনের সামনের দিকে মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বৃহত্তম পানির ফোয়ারা সংস্কার কার্যের মূল ফলক হল কাঠের দরজা ও জানালা কারুকার্য এবং পুনর্নির্মাণ প্রাচীনতম নকশা অনুসরণ করে রঙের প্রলেপ করা হচ্ছে। 

স্থানীয়দের  বর্ণনা ক্রম অনুসারে

এছাড়াও লালকুঠির প্রতি স্থানীয়দের আকৃষ্ট করার জন্য মোঃ আবু সাঈদ এ লেনের বাসিন্দা বলেন ছোটবেলা থেকে বাবা-মায়ের হাত ধরে এখানে আসতাম নাটক কবিতা আবৃতি ঈদের সংস্কৃতি অনুষ্ঠান অংশ নিতাম ঘন্টা পর ঘন্টা আড্ডা দিতাম এই ভবনের সিড়িতে এটা শুধু একটি ভবন নয় বরং আমাদের জীবনের বিশেষ একটি অংশ যার সংস্থানের ফলে স্মৃতিগুলো আবার জীবন্ত হয়ে উঠছে

আরো পড়ুনঃবরগুনার নিদ্রা সমুদ্র সৈকত অপূর্ব সৌন্দর্য এবং  যাওয়ার উপায় 

এছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদুর রহমান জানান একসময় লালকুঠিতে সেমিনার আলোচনা সভা ও কমিউনিটি গেদারিং হত অনেক দূর দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসতো কিন্তু অব্যবহৃত কারণে আগ্রহ হারিয়ে যায় সংস্কারের পরে আশা করছি পুনরায় আগের মত জৌলুস ফিরে পাবে।

পাকিস্তান শাসনামলে নর্থব্রুক হল ঐতিহ্য সৌন্দর্য হারাতে শুরু করেছিল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কারণে ধীরে ধীরে এর পাঠক সংখ্যা কমতে থাকে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে অনেক বই নষ্ট হয়ে যায় পুনরায় উদ্ধারে তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি গণমিলনায়তনের মতো এই ভবন যেটা ছিল প্রধান আকর্ষণ অনেকাংশে শেষ হয়ে যায় নর্থব্রুক হলটি লাল  রংগে রাঙানো ছিল এজন্যই এই ভবনের নাম লালকুঠি।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রকল্পের পরিচালক রাজীব খাদেম সংস্থাকে জানায় সংস্কারের কাজ অগ্রগতি প্রায় ৮০ শতাংশ শেষের দিকে স্থানীয় কিছু সমস্যা থাকলেও আমরা বাসিন্দাদের সাথে বসে বাকি সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছি শিক্ষিত ও মার্জিত শ্রমিকদের দ্বারায় সংশোধনশীল ভাবে কাজ করানো হচ্ছে ভবনের শত বছরের আগে রুপ ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করছি আগামী কয়েক মাসের ভেতরে কাজ সম্পন্ন হবে আশা করা যাচ্ছে।

পুরান ঢাকার লালকুঠি যাবার উপায়

ঢাকা গুলিস্তান থেকে

পুরান ঢাকার লালকুঠি যাওয়ার উপায় হল আপনি কোথায় থেকে আসছেন এ বিষয়ে ঢাকা গুলিস্তানে এসে রিস্কা বা অটোতে চড়ে নীলকুঠি  মোড় যাব বললে আপনাকে পৌঁছে দিবে

হেঁটে গেলে ১০ থেকে ১২ মিনিট সময়ে পৌঁছে যাবেন

ঢাকা মিরপুর উত্তরা থেকে

প্রথমে বাসে চড়ে আজিমপুর বা বকশিবাজার নামতে হবে আজিমপুর নেমে লালকুঠি বললে সকল রিস্কা চালক চিনবে ৩০ থেকে ৫০টাকা ভাড়া নেবে

আরো পড়ুনঃতমা তুঙ্গী পর্যটন কেন্দ্র বান্দরবান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানুন

ঢাকা গাবতলী থেকে

গাবতলী থেকে আজিমপুর পর্যন্ত নামবেন এখান থেকে অটো কিংবা রিক্সাতে নীলকুঠি বললে নিয়ে যাবে।

এছাড়াও  সদরঘাট টার্মিনাল থেকে হেঁটে পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাবেন নীলকুঠি

ঢাকার আশেপাশে থেকে লালকুঠি যেতে কত সময় লাগবে  এবং ভাড়া কত নিচে তালিকা করে প্রকাশ করা হলো

ঢাকা লালকুঠি কোথায় খাবেন

পুরান ঢাকা লালকুঠি গিয়ে কয়েকটি খাবারের হোটেল পাবেন তার মধ্যে অন্যতম হলো

 

বিউটি বোর্ডিং

এখানে উন্নত মানের শুটকি ভর্তা 

ভাত মাছ ডাল খাবার পেয়ে যাবেন 

হাজী বিরিয়ানি 

পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার হাজী বিরানি পাবেন 

হেঁটে গেলে ৫ থেকে ৭ মিনিট দূরে লালকুঠি থেকে 

নান্না বিরানি 

  ঢাকা নয়া বাজার থেকে পাঁচ থেকে সাত মিনিট হাটলে পেয়ে যাবেন

 এখানে খাসির মাংস ও গরুর মাংস পাওয়া যায় 

স্টার কাবাব 

লালবাগ কেল্লার কাছাকাছি তবে হেটে গেলে একটু দূরে হয়

লালকুঠির সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তর পর্ব

পুরান ঢাকা লালকুঠি সম্ভাব্য কিছু প্রশ্ন উত্তর পর্ব দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনে জেনে নিতে পারেন

প্রশ্নঃলালকুঠি কোথায় অবস্থিত

উত্তরঃ লালকুঠি পুরান ঢাকা, বর্ধন বাড়ি এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত

প্রশ্নঃলালকুঠি কোন সময় নির্মিত হয়েছিল

উত্তরঃলালকুঠি নির্মিত হয় উন্নবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ইংরেজি শাসনামলে

প্রশ্নঃলালকুঠি কেন নির্মাণ করা হয়েছিল

উত্তরঃএটি মূলত ইংরেজি  প্রশাসনিক কার্যালয় ও আবাসিক ভবন হিসেবে নির্মিত করা হয়

প্রশ্নঃলালকুঠির নাম লালকুঠি কেন রাখা হয়

উত্তরঃভবনটি লাল ইট দিয়ে তৈরি হওয়ায় এর নাম রাখা হয় লালকুঠি 

প্রশ্নঃলালকুঠি কোন স্থাপিত্য শৈলীতে নির্মিত

উত্তরঃএটি ইউরোপীয় ও মুঘল স্থাপিত্য সংমিশ্রনে নির্মিত

প্রশ্নঃলালকুঠি ঐতিহাসিক গুরুত্ব কি

উত্তরঃএটি ব্রিটিশ শাসনামলে প্রশাসনিক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এবং পুরান ঢাকার উপনিবেশিক স্থাপিতের ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন

প্রশ্নঃলালকুঠির বর্তমান অবস্থা কি

উত্তরঃবর্তমানে এটি ঐতিহাসিক স্থাপনে হিসেবে সংরক্ষিত তবে কিছু অংশ জোড়ার জন্য অবস্থায় রয়েছে সংস্কারের কাজ চলছে

প্রশ্নঃলালকুঠির আশেপাশে কি দর্শনীয় স্থান আছে

উত্তরঃলালবাগ কেল্লা আহসান মঞ্জিল নবাব বাড়ি এবং বুড়িগঙ্গা নদী

আরো পড়ুনঃকাপ্তাই হ্রদের নীল জলের উপর পাহাড়ি গ্রাম্যদ্বীপ কাট্রলী সম্পর্কে জানুন

আমাদের শেষ কথা

পুরান ঢাকার লালকুঠি আর্টিকেলটি  আজকের সম্পূর্ণ আপডেট ও সঠিক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে আশা করছি বুঝতে পেরেছেন এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো দিয়ে সঙ্গে থাকুন এরপরও যদি কোন রকম তথ্য জানার প্রয়োজন হয় তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন আজকের আর্টিকেলটি সবার কাছে বেশি বেশি শেয়ার করে দিবেন। 

পুরান ঢাকায় গিয়ে কোথায় থাকবেন কিভাবে খাব কত খরচ পড়বে সম্পূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে  এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিদিন ভিজিট করুন আর ফলো দিয়ে সাথে থাকুন আমাদের সঙ্গে এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।